সিরাজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি#
বর্তমানে আমেরিকাসহ মোট ৩২ দেশ একত্রে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে৷ তবে সারা বিশ্বের মধ্যে একক কোন দেশ হিসেবে একমাত্র রেড জায়ান্ট চীনের রয়েছে নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি স্পেস স্টেশন। যার নাম তিয়ানগং স্পেস স্টেশন (Tiangong space station)। এর বর্তমান ওজন হচ্ছে এক লক্ষ কেজি বা ১০০ টন। এই স্পেস স্টেশনের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের কাজ এখনো পর্যন্ত চলমান রয়েছে।
চীনের এই নিজস্ব প্রযুক্তির স্পেস স্টেশনটি তিনটি মডিউল দ্বারা গঠিত। যার মধ্যে থিয়ানহ্য কোর, ওয়েন্থিয়ান এবং মেংথিয়ান ল্যাব মডিউল সিস্টেম। এর মধ্যে থিয়ানহ্য কোর মডিউলটি ২০২১ সালের ২৯শে এপ্রিল এবং ওয়েন্থিয়াং মডিউলটি ২০২২ সালের ২৪শে জুলাই পৃথিবীর লো আর্থ অর্বিটে স্থাপন করা হয়। তাছাড়া গত ২০২২ সালের ৩১শে অক্টোবর সর্বশেষ মেংথিয়ান ল্যাব মডিউলটি চালু হওয়ার পর থেকে মহাকাশ স্টেশনটি পুরোপুরিভাবে তার কার্যক্রম শুরু করে।
এটি পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৮৯.১ কিলোমিটার উচ্চতায় লো আর্থ অর্বিটে অবস্থান করছে। এর অর্বিটাল স্পিড প্রতি সেকেন্ডে ৭.৬২ কিলোমিটার এবং এটি ৯২.৩ মিনিটে তার কক্ষপথ প্রদক্ষিণ সম্পন্ন করে। এদিকে চীনের শি জিং পিং সরকার তাদের নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি স্পেস স্টেশনটি আরো সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের জন্য বিশেষ ফান্ড বরাদ্দ দিয়েছে। যার আওতায় আগামী হয়েক বছরের মধ্যে এর মডিউলের সংখ্যা তিন থেকে ছয়ে উন্নীত করা হবে এবং তখন এর আকার ও ওজন হবে প্রায় ১৮০ টন। যা কিনা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের প্রায় ৪০% এর সমান।
চীনের স্পেস স্টেশনের সার্ভিস লাইফ টাইম ধরা হয়েছে ১৫ বছরের অধিক সময়। বর্তমানে এই স্পেস স্টেশনে চীনের মহাকাশচারী ও গবেষকেরা নিয়মিত যাচ্ছেন এবং তাদের পরিকল্পিত ও নির্ধারিত স্পেস ওয়ার্ক শেষে আবার পৃথিবীতে ফিরে আসছেন। আর তাই এটিকে মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছে বলে মনে করে চীন। তার পাশাপাশি পৃথিবীর কাছাকাছি মহাকাশ স্টেশনের জন্য একটি বিকল্প স্পেস ল্যাবের প্ল্যাটফর্ম সুবিধা প্রদান করার বিশয়ে প্রবলভাবে আশাবাদী একাডেমি অব স্পেস টেকনোলজি অব চায়না। অদূর ভবিষ্যতে যার সুফল ও সুবিধা সারা বিশ্ববাসী ভাগ করে নিতে পারে বলে মনে করে দেশটি।##