--- বিজ্ঞাপন ---

কবে ঢুকছে শীত

0

বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস আগামী পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে বলেছে, এ সময়ের মধ্যে সার্বিক তাপমাত্রা কিছুটা নেমে যেতে পারে নিচের দিকে। রাতের তাপমাত্রা খুব বেশি না কমলে দিনের তামপাত্রা কমতে থাকবে। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ৩১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কলকাতার আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর,  কলকাতার উপকণ্ঠে দমদমে রাতের পারদ ছিল ১৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পশ্চিমের জেলাগুলিতে রাতের তাপমাত্রা মহানগরের থেকে কিছুটা কম। কিন্তু এ সময় পারদ আরও নীচে থাকতে দেখা যায়। বাঁকুড়া, আসানসোল, পুরুলিয়াতেও এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে ছিল বলে আবহবিজ্ঞানীরা জানান।

শীত নিয়ে বাংলাদেশের সাথে সাথে কলকাতাতেও চলছে নানা জল্পনা। কেউ বলছে শীত আসতে দেরী হবে, কারও মতে ডিসেম্বরে আসবে শৈত্য প্রবাহ। কলকাতার গণমাধ্যম লিখেছে, দু’-এক দিন ধরেই কলকাতায় রোদের তেজ নেই খানিকটা মেঘলা আকাশও। কলকাতায় তাপমাত্রা এখনও স্বাভাবিকের ওপরে। রাতে এখনও হালকা হলেও ফ্যান চালাতে হচ্ছে। শীতের আমেজ থাকলেও ঘাম হচ্ছে। ডিসেম্বরের প্রথম দিনেই কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি। গভীর রাতে হিমেল ভাবটুকু ছাড়া আপাতত কিছুই অনুভব করা যাচ্ছে না। সাত বছর আগে, ডিসেম্বরের প্রথম দিনেই কাঁপুনি দিয়ে খাতা খুলেছিল শীত। কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ১৪.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি নীচে! সোমবার তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। যা স্বাভাবিকের থেকে বেশি। উত্তর ও পূর্ব ভারতের সমতলে শীত নির্ভর করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার উপরে। ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা ভারী বায়ু বা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে কাশ্মীরে ঢোকে এবং তুষারপাত ঘটায়। সেই ঠান্ডা হাওয়াই ক্রমশ পূর্ব ভারতের দিকে বয়ে আসে। বর্তমানে কাশ্মীরে ঝঞ্ঝা না-থাকায় উত্তুরে হাওয়ার কনকনে ভাব নেই। তার ফলেই তাপমাত্রা তেমন নামছে না।

আর বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যম লিখেছে, ঠাণ্ডা বাতাসের সাথে বাড়ছে শীত। কমেছে বাতাসের আর্দ্রতা। দেশের উত্তরাঞ্চলে ঘন হচ্ছে কুয়াশা। কয়েক দিন ধরে আকাশ মেঘলা থাকায় দিনের নির্দিষ্ট সময় সূর্য দেখা যায় না। আজ আবার দিনের বেলা রংপুর বিভাগে হালকা অথবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হতে পারে। ফলে উত্তরাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা আরো কমে যেতে পারে। বাংলাদেশের বাইরে আরো উত্তরে তাপমাত্রা আরো কম। রাশিয়ার সাইবেরিয়ায় গতকাল সারা দিনই তামপাত্রা মাইনাস ১৮ থেকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। ঠাণ্ডার কারণে সাইবেরিয়ান পাখিরা ধীরে ধীরে বাংলাদেশের মতো অপেক্ষাকৃত উষ্ণ আবহাওয়ার দেশে আসতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন জলাশয়ে অতিথি পাখির আগমন শুরু হয়েছে। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি নামছে দেশের নদী ও বিল-হাওরে। গতকাল সোমবার বাংলাদেশে তাপমাত্রার পারদ নেমে গেছে ১৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দেশের শীতলতম স্থানের অন্যতম মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
সাগরে সৃষ্টি হয়েছে একটি মওসুমি লঘুচাপ। এটা হয়তো দেশের আবহাওয়াকে বদলে দেয়ার ক্ষমতা রাখে না। তবু স্বাভাবিক আবহাওয়ায় এই লঘুচাপের গুরুত্ব রয়েছে।
রাতের চলাফেরা এখন আর আগের মতো হালকা-পাতলা জামা গায়ে দিয়ে সম্ভব হচ্ছে না। রাজধানীতেই একটু ভারী কাপড় অথবা জ্যাকেট গায়ে দিতে পারলে আরাম বোধ হয়। তবে গ্রামের রাত আরো ঠাণ্ডা। রাতের তাপমাত্রাটা কখনো কখনো ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যাচ্ছে। ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার বেগে বাতাস সব সময় বয়ে যায় দেশের সর্বত্র।
ঢাকার তাপমাত্রা তেমন না কমলেও গ্রামের দিকে তাপমাত্রা ক্রমহ্রাসমান। গতকাল রাজধানী ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯.৩ পর্যন্ত নামলেও গতকাল দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় শ্রীমঙ্গলে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৬ শতাংশ। আর্দ্রতা বেশি থাকলে বাতাস বেশি জলীয়বাষ্প ধারণ করে রাখতে পারে। বেশি জলীয় বাষ্প বেশি তাপও ধরে রাখতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সামনের ৪৮ ঘণ্টায় দেশের সার্বিক তাপমাত্রা আরো হ্রাস পেতে পারে।
বাংলাদেশে শীতল পরিবেশের অনেকগুলো কারণের একটি হলো উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়। শীত শুরু হলেই বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতীয় অংশ উচ্চচাপ বলয়ের আতওায় থাকে। একটি বর্ধিতাংশ বাংলাদেশে পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে প্রবেশ করলে পরিবেশ ঠাণ্ডা করে দেয়। এ প্রক্রিয়াটি কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া বয়ে নিয়ে আসে বাংলাদেশ।### ২.১২.১৯

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.